বিজ্ঞান কি ও কাকে বলে । বিজ্ঞানের সংজ্ঞা
ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞানভাণ্ডারের নাম বিজ্ঞান। তবে আরও সহজ করে বোঝার জন্য আমাদের "বিজ্ঞান" শব্দটির অর্থ জানা দরকার।
বিজ্ঞান শব্দটি ইংরেজি 'Science' শব্দের বাংলা অনুবাদ। Science শব্দটি আবার এসেছে ল্যাটিন শব্দ 'Scientia' থেকে, যার অর্থ জ্ঞান। বাংলায় বিজ্ঞান শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় বি+জ্ঞান, যার অর্থ দাঁড়ায় বিশেষ জ্ঞান। অর্থাৎ কোন বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান কে বলা হয় বিজ্ঞান। এবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে এই "বিশেষ জ্ঞান" আবার কি! আসলে এই "বিশেষ জ্ঞান" ই হল কোন ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞান।
অতএব, আমরা শুধুমাত্র যখন কোন বিষয় নিয়ে বিস্তর গবেষণা বা পরীক্ষা করি এবং সেই গবেষণা বা পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ ও যাচাই করে নিয়মতান্ত্রিক বা সুশৃঙ্খল জ্ঞান লাভ করি তখনই তাকে বিজ্ঞান বলে। আবার যারা এই বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেন তাদের আমরা বিজ্ঞানী বলি।
বিজ্ঞানের শাখা
আমাদের একটি প্রচলিত প্রশ্ন হল, বিজ্ঞান কত প্রকার? আসলে বিজ্ঞানকে এমন 'প্রকারে' বিভক্ত করা যায় না। তবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা রয়েছে। বিজ্ঞানের এ শাখাগুলোকে আবার বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়।
বিজ্ঞানের তিনটি প্রধান শাখা রয়েছে। এগুলো হল-
১। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান
২। সামাজিক বিজ্ঞান
৩। সাধারণ বিজ্ঞান
তবে সাধারণ বিজ্ঞান আদৌ বিজ্ঞানের কোন শাখা কি না তা নিয়ে কিছুটা মতভেদ আছে।
প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানকে গবেষণামূলক বিজ্ঞানও বলা হয়।
১। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানঃ প্রাকৃতিক বিজ্ঞান মূলত প্রকৃতির গতিধারার বর্ণনা, ভবিষ্যদ্বাণী এবং ব্যাখ্যার জন্য গবেষণামূলক প্রমাণ নিয়ে কাজ করে। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এসকল গবেষণা মূলক প্রমাণ প্রস্তুত করা হয়। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-
- জীব বিজ্ঞানঃ জীববিজ্ঞান হল প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে জীব ও জীবন সংক্রান্ত গবেষণা করা হয়। জীবের গঠন, বৃদ্ধি, বিবর্তন, শ্রেণীবিন্যাস-বিদ্যার আলোচনা বিজ্ঞানের এই শাখাটির অন্তর্ভুক্ত। জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা রয়েছে। যেমনঃ প্রাণীবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণরসায়ন, আণবিক জীববিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান প্রভৃতি।
- ভৌত বিজ্ঞানঃ প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের যে শাখায় বিভিন্ন তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে ভৌত বিজ্ঞান বলা হয়। তবে এসব তত্ত্বীয় বিষয় সমূহের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গাণিতিক হিসাব নিকাশের সাহায্যে সত্যতা প্রমাণ করা হয়। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের এ শাখাটিকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। তবে মূলত ভৌত বিজ্ঞানকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূবিদ্যা ইত্যাদি প্রধান প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
২। সামাজিক বিজ্ঞানঃ সামাজিক বিজ্ঞান বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যা সমাজ এবং সমাজস্থ একক ব্যক্তিকে নিয়ে গবেষণা করে। সামাজিক বিজ্ঞানী গন দার্শনিক তত্ত্বসমূহ ব্যক্তি এবং সমাজ গবেষণার সময় কাজে লাগাতে পারেন। সামাজিক বিজ্ঞানের শাখা বেশ প্রসারিত। এদের মধ্যে নৃবিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব, যোগাযোগ বিদ্যা, অর্থনীতি, ইতিহাস, মানবীয় ভূগোল, আইন, ভাষাবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, জনস্বাস্থ্য, এবং সমাজবিজ্ঞান উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও সামাজিক বিজ্ঞানের আরও কিছু শাখা রয়েছে।
৩। সাধারণ বিজ্ঞানঃ বিজ্ঞানের যে শাখায় বিজ্ঞানের আদি মৌলিক বিষয় যেমন যুক্তি, গণিত ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে সাধারণ বিজ্ঞান বলে। সাধারণ বিজ্ঞানের শাখাগুলোর মধ্যে অন্যতম হল যুক্তি, গণিত, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যান।
ফলিত বিজ্ঞান
ফলিত বিজ্ঞান হল তত্ত্বীয় বিজ্ঞানের একটি প্রয়োগিক দিক। বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে বাস্তবিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে তাকে ফলিত বিজ্ঞান বা প্রয়োগিক বিজ্ঞান বলে। এটি বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে বিদ্যমান বৈজ্ঞানিক জ্ঞান প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করা হয়। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে মূলত প্রকৃতির বিভিন্ন তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা, পরীক্ষা বা হিসাব নিকাশ সাপেক্ষে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করা হয়। আর এই সকল অর্জিত জ্ঞান যখন বাস্তবিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় তখন তাকে ফলিত বিজ্ঞান বলা হয়। যেমন বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি।
বিজ্ঞান শিক্ষা
বিজ্ঞান শিক্ষা হল অ-বিজ্ঞানীদের যেমন বিদ্যালয়ের শিশু, কলেজ ছাত্র বা সাধারণের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে বিজ্ঞানের পাঠদান এবং শেখানো। অর্থাৎ আমরা যারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে বিজ্ঞান শিখছি তাই বিজ্ঞান শিক্ষা।
References 1References 2
References 3
কমেন্ট বক্সে লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত জানান |
7 মন্তব্যসমূহ
Nice
উত্তরমুছুনThank you so much.
মুছুনঅনেক অনেক ধন্যবাদ
উত্তরমুছুনআপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকুন।
মুছুনThank you
মুছুনমনোবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন বিঙ্গান কি
মুছুনWhat to Do if You Don't Have Anyone to Write You a Recommendation Letter
উত্তরমুছুনReach out to your academic advisor. ...
Reach out to former professors. ...
Ask your boss (or former boss) ...
Take a class and build a relationship. ...
Talk to Admissions.
If it seems any informative mistake in the post, you are cordially welcome to suggest fixing it.