চ্যাট জি পি টি (Chat GPT): কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এক নতুন অধ্যায় | পর্ব ১: চ্যাট জি পি টি কি?

চ্যাট জিপিটি কি?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI- Artificial Intelligence) তার সূচনা থেকে অনেক দূর এগিয়েছে। ধীরে ধীরে এটি এখন যোগাযোগ সহ আমাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে যাচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় চ্যাট বট বা কথোপকথনে পারদর্শী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই পরিচিত হয়েছি। তবে জিপিটি প্রযুক্তির আবির্ভাবের সাথে সাথে কথোপকথনমূলক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ক্ষেত্রে রীতিমতো বিপ্লব ঘটে গেছে।

বেশ কিছুদিন হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সবখানেই টেক দুনিয়ার যে শব্দটি ক্রমাগত ঘুরে বেড়াচ্ছে তা হল চ্যাট জি পি টি। কিন্তু কি এই চ্যাট জি পি টি? আর কেনই বা এই শব্দটি টেক দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটিয়ে দিচ্ছে?

চ্যাট জিপিটি নিয়ে এরকম সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো আমাদের ধারাবাহিক এই লেখাটিতে। 

আজ থাকছে প্রথম পর্ব- চ্যাট জিপিটি কি?


চ্যাট জিপিটি (Chat GPT) কি?

চ্যাট জিপিটি হল এমন একটি AI মডেল যা এর ব্যবহারকারীদের জন্য অতীতের তুলনায় অধিক উন্নত এবং আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য দুনিয়া ব্যাপী সাড়া জাগিয়েছে। এই নতুন এআই মডেলটি কথোপকথনের জন্য প্রাকৃতিক ভাষা প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করে। এটি জিপিটি মডেলের একটি উন্নত সংস্করণ যা চ্যাটবট তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে এবং একে গ্রাহকের অনুসন্ধানে সাড়া দিতে এবং সহায়তা প্রদান করতে সক্ষম করে তৈরি করা হয়েছে। 

সহজ কথায়, চ্যাট জিপিটি হল একটি চ্যাট বট, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পরিচালিত গ্রাহকদের যে কোন প্রশ্নে মেসেজের মত করে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। গুগল সার্চে আমরা কোন সার্চে অসংখ্য উত্তরের অপশন পাই (সার্চ রেজাল্ট লিংক), অন্যদিকে চ্যাট জিপিটি একাধিক উত্তর এড়িয়ে আপনাকে শুধু সঠিক উত্তরটি প্রদান করে।

চ্যাট জিপিটি (Chat GPT) বা Generative Pre-trained Transformer, একটি বিপ্লবী কথোপকথনমূলক এআই যা বিশ্বে রিতিমত ঝড় তুলে দিয়েছে। Open AI বা উন্মুক্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা বিকশিত, চ্যাট জিপিটি একটি নিউরাল নেটওয়ার্ক-ভিত্তিক মডেল যা কথোপকথনের সময় প্রাকৃতিক ভাষা বুঝতে এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিটি প্রচুর পরিমাণে পাঠ্য ডেটার উপর প্রশিক্ষিত হয়েছে, ফলে এটি এমন প্রতিক্রিয়া এবং বিষয়বস্তু তৈরি করতে সক্ষম যা মানুষের চেয়ে খুব একটা আলাদা নয়।

চ্যাট জিপিটি-এর প্রয়োগের ক্ষেত্র বিশাল।এটি ইতিমধ্যেই চ্যাটবট, ভার্চুয়াল সহকারী,  কথোপকথনমূলক মাধ্যম এবং ইন্টারফেসগুলির একটি বিরাট পরিসরকে উন্নত করতে ব্যবহৃত হয়েছে। চ্যাট জিপিটি-এর অন্যতম প্রধান সুবিধা হল নতুন তথ্য শেখার এবং মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। এটি তাদের গ্রাহক পরিষেবার ক্ষেত্রে মসৃণভাবে সেবা প্রদানের
 জন্য একটি আদর্শ হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহৃত হতে পারে৷ চ্যাট জিপিটি বিভিন্ন ব্যাবসা বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ২৪ ঘন্টা মানুষের কোন হস্তক্ষেপ ছাড়াই তাদের গ্রাহকদের বিভিন্ন প্রশ্নের দ্রুত এবং সঠিক উত্তর দিতে পারে। ফলে কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মানুষের মতো করে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে; অর্থাৎ প্রশ্নের বিপরীতে ম্যাসেজের মাধ্যমে রিপ্লাই দিতে পারে।

ওপেন এআই (Open AI) বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি কোম্পানি, যার একজন প্রতিষ্ঠাতা হলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক, এই চ্যাটবট টি বাজারে এনেছে। এরইমধ্যে ইলন মাস্কের এই চ্যাটবুটে ব্যবহারকারীর সংখ্যা কয়েক মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। যা হয়েছে চ্যাটজিপিটি উন্মুক্ত করার মাত্র এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে। পরিসংখ্যান বলছে মাত্র ৫ দিনে ১০ লাখ ব্যবহারকারী রেজিস্ট্রেশন করেছে এই চ্যাটবট প্লাটফর্মে।

সামগ্রিকভাবে, চ্যাট জিপিটি মেশিনের সাথে আমাদের যোগাযোগের উপায়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে, সেই সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশে বেশ কয়েকধাপ এগিয়ে নিতে একে তুলনাহীন বলাই যেতে পারে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ