জ্যামিতির সকল সংজ্ঞা | ৮০ টিরও অধিক জ্যামিতিক সংজ্ঞা

জ্যামিতির সকল সংজ্ঞা | ৮০ টির ও অধিক জ্যামিতিক সংজ্ঞা
জ্যামিতির সকল সংজ্ঞা

জ্যামিতির বিভিন্ন রাশি ও ক্ষেত্র রয়েছে। এসব জ্যামিতিক রাশি ও ক্ষেত্র সমূহের সংজ্ঞার সম্পূর্ণ সংগ্রহটি পাবেন এখানে। বিন্দু থেকে শুরু করে বৃত্ত বা চতুর্ভুজ সব ধরনের জ্যামিতিক ক্ষেত্রের সংজ্ঞা পেতে দেখে নিন সম্পূর্ণ লেখাটি। 

  

বিন্দু, রেখা, তল 

১। স্থান কাকে বলে?

উত্তরঃ একটি নির্দিষ্ট আকারের বস্তু যতটুকু জায়গা দখল করে তাকে ঐ বস্তুর স্থান বলে।

২। রেখা কাকে বলে?

উত্তরঃ যার দৈর্ঘ্য আছে কিন্তু, প্রস্থ ও বেধ বা উচ্চতা নেই তাকে রেখা (line) বলে। রেখার কোন প্রান্ত বিন্দু নেই।

৩। সরলরেখা কাকে বলে?

উত্তরঃ যে রেখা এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে যেতে কোন দিক পরিবর্তন করে না অর্থাৎ সোজাসুজি চলে তাকে সরলরেখা (Straight Line) বলে।

৪। বক্ররেখা কাকে বলে?

উত্তরঃ যে রেখা এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে যেতে দিক পরিবর্তন করে অর্থাৎ আঁকাবাঁকা চলে তাকে বক্ররেখা বলে।

৫। রশ্মি কাকে বলে?

উত্তরঃ যদি কোন রেখাংশের একটি প্রান্তবিন্দুর অবস্থান ঠিক রেখে অপর প্রান্তবিন্দুটি ইচ্ছেমত বাড়ানো যায়, তবে তাকে রশ্মি (Ray)বলে।

৬। বিন্দু কাকে বলে?

উত্তরঃ যার শুধু অবস্থান আছে কিন্তু দৈর্ঘ্য,প্রস্থ ও বেধ বা উচ্চতা কিছুই নেই তাকে বিন্দু বলে। বিন্দুকে শূণ্য মাত্রার সত্ত্বা ধরা হয়।

অথবা, যার শুধু অবস্থান আছে কিন্তু দৈর্ঘ্য,প্রস্থ ও বেধ বা উচ্চতা কিছুই নেই তাকে বিন্দু বলে।

৭। রেখাংশ কাকে বলে?

উত্তরঃ প্রকৃতপক্ষে রেখা হল কতগুলো বিন্দুর সমষ্টি। রেখার সীমাবদ্ধ অংশকে রেখাংশ (Parts of line)বলে। 

৮। তল কাকে বলে?

উত্তরঃ যার শুধু দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ আছে কিন্তু বেধ নেই তাকে তল বলে। অথবা, ঘন বস্তুর উপরিভাগকে তল বলে।

৯। লম্ব কাকে বলে?

উত্তরঃ একই রেখার উপর দুটি সন্নিহিত কোণ পরস্পর ৯০ ডিগ্রী বা সমকোণ হলে, সমকোণের বাহু দুটি পরস্পরের উপর লম্ব।

১০। সমান্তরাল রেখা কাকে বলে?

উত্তরঃ একই সমতলে অবস্থিত দুটি সরল রেখা একে অপরকে ছেদ না করলে, তাদেরকে সমান্তরাল সরল রেখা বলে ।

১১। ছেদক কাকে বলে?

উত্তরঃ যে সরলরেখা দুই বা ততোধিক সরলরেখাকে ছেদ করে, তাকে ছেদক বলে ।


কোণ

১২। কোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ যদি দুইটি সরলরেখা পরস্পরের সাথে কোনো বিন্দুতে মিলিত হয়, তবে মিলন বিন্দুতে কোণ উৎপন্ন হয়। দুটি সরলরেখা তির্যকভাবে পরস্পরের সাথে মিলিত হলে মিলিত বিন্দুতে কোণ উৎপন্ন হয়।

১৩। সূক্ষ্মকোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ এক সমকোণ (90 ডিগ্রী) অপেক্ষা ছোট কোণকে সূক্ষ্মকোণ বলে।

১৪। স্থূলকোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ এক সমকোণ অপেক্ষা বড় বিন্তু দুই সমকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে সথূলকোণ বলে।

১৫। সমকোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ একটি সরল রেখার উপর অন্য একটি লম্ব টানলে এবং লম্বের দু’পাশে অবস্থিত ভূমি সংলগ্ন কোণ দুটি সমান হলে, প্রতিটি কোণকে সমকোণ বলে। এক সমকোণ = 90 ডিগ্রী

১৬। প্রবৃদ্ধকোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ দুই সমকোণ অপেক্ষা বড় কিন্তু চার সমকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবদ্ধ কোণ বলে। অর্থাৎ 360 > x > 180 হলে x একটি প্রবৃদ্ধ কোণ।

১৭। সরলকোণ কাকে বলে? 

উত্তরঃ দু’টি সরল রেখা পরস্পর বিপরীত দিকে গমন করলে রেখাটির দু’পাশে যে কোণ উৎপন্ন হয় তাকে সরলকোণ বলে। সরলকোণ দুই সমকোণের সমান বা 180 ডিগ্রী। 

১৮। বিপ্রতীপকোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ দু’টি সরল রেখা পরস্পর ছেদ করলে যে চারটি কোণ উৎপন্ন হয় এদের একটিকে তার বিপরীত কোণের বিপ্রতীপ কোণ বলে।

১৯। সম্পূরককোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ দু’টি কোণের সমষ্টি 180 ডিগ্রী বা দুই সমকোণ হলে একটিকে অপরটির সম্পূরক কোণ বলে

২০। পূরককোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ দু’টি কোণের সমষ্টি এক সমকোণ বা 90 ডিগ্রী হলে একটিকে অপরটির পূরক কোণ বলে

২১। একান্তরকোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ দু’টি সমান্তরাল রেখাকে অপর একটি রেখা তির্যকভাবে ছেদ করলে ছেদক রেখার বিপরীত পাশে সমান্তরাল রেখা যে কোণ উৎপন্ন করে তাদেরকে একে অপরের একান্তর কোণ বলে। একান্তর কোণগুলো পরস্পর সমান হয়।

২২। অনুরূপকোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ দু’টি সমান্তরাল সরল রেখাকে অপর একটি সরল রেখা ছেদ করলে ছেদকের একই পাশে সমান্তরাল রেখাদ্বয়ের সাথে যে কোণ উৎপন্ন হয় তকে অনুরূপ কোণ বলে। অনুরূপ কোণগুলো পরস্পর সমান হয়।

২৩। সন্নিহিতকোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ যদি দু’টি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকে তবে একটি কোণের অপর কোণের সন্নিহিত কোণ বলে।


ত্রিভুজ

২৪। ত্রিভুজ কাকে বলে?

উত্তরঃ তিনটি সরলরেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রকে ত্রিভূজ বলে। 

২৫। সুক্ষ্মকোণীত্রিভূজ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ত্রিভূজের তিনটি কোণই এক সমকোণ(90 ডিগ্রী ) এর ছোট তাকে সূক্ষ্মকোণী ত্রিভূজ বলে।

২৬। স্থূলকোণীত্রিভূজ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ত্রিভূজের একটি কোণ সথূলকোণ বা এক সমকোণ অপেক্ষা বড় তাকে সথূলকোণী ত্রিভূজ বলে। কোন ত্রিভূজের একের অধিক সথূলকোণ থাকতে পারে না।

২৭। সমকোণী ত্রিভূজ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ত্রিভূজের একটি কোণ সমকোণ তাকে সমকোণী ত্রিভূজ বলে। কোন ত্রিভূজে একটির অধিক সমকোণ থাকতে পারে না। সমকোণী ত্রিভূজের সমকোণের বিপরীত বাহুকে অতিভূজ এবং সমকোণ সংলগ্ন বাহুদ্বয়ের একটিকে ভূমি এবং অপরটিকে লম্ব বলা হয়।

২৮। লম্বকেন্দ্র কাকে বলে? 

উত্তরঃ ত্রিভুজের তিনটি শীর্ষ থেকে বিপরীত বাহুগুলির উপর তিনটি লম্ব সমবিন্দুগামী, এবং বিন্দুটির নাম লম্বকেন্দ্র(orthocenter)। 

২৯। সমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ত্রিভুজের তিনটি বাহুই সমান তাকে সমবাহু ত্রিভুজ বলে।

৩০। সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ত্রিভুজের দুটি বাহু পরস্পর সমান এবং অপর বাহুটি অসমান তাকে সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ বলে।

৩১। বিষমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ত্রিভুজের তিনটি বাহুই পরস্পর অসমান তাকে বিষোমবাহু ত্রিভুজ বলে।

৩২। অতিভুজ কাকে বলে?

উত্তরঃ সমকোণী ত্রিভুজের সমকোণের বিপরীত বাহুর নাম অতিভুজ। পিথাগোরাসের বিখ্যাত উপপাদ্য অনুযায়ী সমকোণী ত্রিভুজের অতিভুজের বর্গ এর সমকোণ-সংলগ্ন দুই বাহুর বর্গের যোগফলের সমান।

৩৩। অন্তঃস্থ কোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ ত্রিভুজের অভ্যন্তরস্থ কোনগুলিকে অন্তঃস্থ কোণ বলে। ত্রিভুজের তিনটি অন্তঃস্থ কোণের সমষ্টি ১৮০°।

৩৪। বহিঃস্থ কোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ ত্রিভুজের বাহুগুলিকে বর্ধিত করলে যে কোণগুলি পাওয়া যায়, তাদেরকে বহিঃস্থ কোণ বলে। । যেকোন বহিঃস্থ কোণ এর অন্তঃস্থ বিপরীত কোণদ্বয়ের সমষ্টির সমান।

৩৫। মধ্যমা কাকে বলে? 

উত্তরঃ ত্রিভুজের কোন শীর্ষবিন্দু থেকে বিপরীত বাহুর মধ্যবিন্দু পর্যন্ত আঁকা রেখাকে বলা হয় ত্রিভুজটির একটি মধ্যমা। ত্রিভুজের তিনটি মধ্যমা একই বিন্দুতে ছেদ করে এবং এটি প্রতিটি মধ্যমার শীর্ষবিন্দু থেকে দুই-তৃতীয়াংশ দূরত্বে অবস্থিত।

৩৬। ত্রিভুজের উচ্চতা কাকে বলে?

উত্তরঃ ত্রিভুজের কোন শীর্ষবিন্দু থেকে বিপরীত বাহুর উপর অঙ্কিত লম্বকে ঐ ত্রিভুজের উচ্চতা বলে।

৩৭। সর্বসম ত্রিভুজ কাকে বলে? 

উত্তরঃ দুইটি ত্রিভুজকে সর্বসম বলা হয় যদি এগুলি নিচের তিনটি শর্তের সেটের যেকোনটি পূরণ করে: 

(১) একটি ত্রিভুজের এক বাহু ও দুইটি কোণ অন্যটির অনুরূপ বাহু ও দুইটি কোণের সমান;

(২) কোন একটি ত্রিভুজের দুই বাহু এবং এদের অন্তর্ভুক্ত কোণ অন্য ত্রিভুজটির দুই বাহু ও অন্তর্ভুক্ত কোণের সমান; অথবা

(৩) একটি ত্রিভুজের তিনটি বাহু অপর ত্রিভুজের তিন বাহুর সমান। যদি একই সমতলে অবস্থিত দুইটি ত্রিভুজকে নিখুঁতভাবে একটির উপর আরেকটিকে বসিয়ে দেয়া যায়, তবে তারা সরাসরি সর্বসম। আর যদি বসানোর আগে একটিকে উল্টে নিতে হয়, তবে ত্রিভুজ দুটি বিপরীতভাবে সর্বসম।

৩৮। সদৃশ ত্রিভুজ কাকে বলে? 

উত্তরঃ যদি দুইটি ত্রিভুজের একটির সবগুলি কোণ অন্যটির সবগুলি কোণের সমান হয়, তবে তাদেরকে সদৃশ ত্রিভুজ বলা হয় এবং এদের অনুরূপ বাহুগুলি সমানুপাতিক হয়।

৩৯। অন্তঃকেন্দ্র কাকে বলে?

উত্তরঃ ত্রিভুজের কোণত্রয়ের সমদ্বিখন্ডকগুলো সমবিন্দু । এ বিন্দুই ত্রিভুজের অন্তঃকেন্দ্র।

৪০। পরিকেন্দ্র কাকে বলে?

উত্তরঃ ত্রিভুজের বাহুত্রয়ের লম্বদ্বিখন্ডকত্রয় সমবিন্দু। এই বিন্দু ত্রিভুজের পরিকেন্দ্র।

৪১। ভরকেন্দ্র কাকে বলে?

উত্তরঃ ত্রিভুজের কোণ একটি শীর্ষবিন্দু এবং তার বিপরীত বাহুর মধ্যবিন্দুর সংযোজক সরলরেখাকে মধ্যমা বলে। ত্রিভুজের মধ্যমাত্রয় সমবিন্দু । এই বিন্দুকে ত্রিভুজের ভরকেন্দ্র বলে।

৪২। লম্ববিন্দু কাকে বলে?

উত্তরঃ ত্রিভুজের শীর্ষত্রয় হতে বিপরীত বাহুর উপর অঙ্কিত লম্বত্রয় সমবিন্দু। এই বিন্দুকে ত্রিভুজের লম্ববিন্দু বলে।


চতুর্ভুজ

৪৩। চতুর্ভুজ কাকে বলে? 

উত্তরঃ  চারটি রেখাংশ দিয়ে সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রকে চতুর্ভুজ বলে। 

৪৪। কর্ণ কাকে বলে?

উত্তরঃ চতুর্ভুজের বিপরীত শীর্ষ বিন্দুগুলোর দিয়ে তৈরি রেখাংশকে কর্ণ বলে। চতুর্ভুজের কর্ণদ্বয়ের সমষ্টি তার পরিসীমার চেয়ে কম।

৪৫। সামান্তরিক কাকে বলে?

উত্তরঃ যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো সমান ও সমান্তরাল এবং বিপরীত কোণগুলো সমান (কিন্তু কোণ গুলো সমকোন নয়) , তাকে সামান্তরিক বলে।

৪৬। আয়তক্ষেত্র কাকে বলে?

উত্তরঃ যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো সমান ও সমান্তরাল এবং প্রতিটি কোণ সমকোণ, তাকে আয়ত বলে।

৪৭। বর্গক্ষেত্র কাকে বলে?

উত্তরঃ যে চতুর্ভুজের চারটি বাহুই পরস্পর সমান এবং কোণগুলো সমকোণ তাকে বর্গক্ষেত্র বলে।

৪৮। রম্বস কাকে বলে? 

উত্তরঃ রম্বস এক ধরনের সামান্তরিক যার সবগুলি বাহু সমান কিন্তু কোণ গুলো সমকোন নয়

৪৯। ট্রাপিজিয়াম কাকে বলে? 

উত্তরঃ যে চতুর্ভুজ এর দুইটি বাহু সমান্তরাল কিন্তু অসমান, তাকে ট্রাপিজিয়াম বলে।

৫০। সুষম বহুভুজ কাকে বলে?

উত্তরঃ  যদি বহুভুজের সবগুলি বাহু ও কোণ সমান হয়, তবে সেটিকে সুষম বহুভুজ বলে।


বৃত্ত

৫১। বৃত্ত কাকে বলে?

উত্তরঃ একই সমতলে অবস্থিত একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে সমদুরবর্তী সকল বিন্দু দ্বারা গঠিত সুষম আবদ্ধ বক্রাকার চিত্রকে বৃত্ত বলে

৫২। কেন্দ্র কাকে বলে?

উত্তরঃ যে নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে বৃত্তের পরিধির উপর সকল বিন্দুর দূরত্ব সমান সেই বিন্দুকে কেন্দ্র বলে।

৫৩। ব্যাসার্ধ কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃত্তের কেন্দ্র থেকে পরিধির উপর যেকোনো বিন্দুর দূরত্ব কে ব্যাসার্ধ বলে।

৫৪। জ্যা কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃত্তের পরিধির উপর যেই কোন দুটি বিন্দুর সংযোজক রেখাংশ কে জ্যা বলে।

৫৫। ব্যাস কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃত্তের কেন্দ্রগামী জ্যাকে ব্যাস বলে।

৫৬। পরিধি কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃত্তের সীমান্ত বরাবর দৈর্ঘ্যকে পরিধি বলে।

৫৭। বৃত্তচাপ কাকে বলে? 

উত্তরঃ বৃত্তের যেকোনো দুটি বিন্দুর মধ্যে পরিধির অংশকে চাপ বলে।

৫৮। অর্ধ-বৃত্তচাপ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে বৃত্তচাপের দৈর্ঘ্য পরিধির অর্ধেক তাকে অর্ধবৃত্ত বলে।

৫৯। বৃত্তাংশ কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃত্তের একটি জ্যা ও একটি চাপ দ্বারা গঠিত অংশকে বৃত্তাংশ বলে।

৬০। বৃত্তকলা কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃত্তের দুইটি ব্যাসার্ধ ও একটি চাপ দ্বারা গঠিত অঞ্চলকে বৃত্তকলা বলে।

৬১। বৃত্তস্থকোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃত্তের দুটি জ্যা পরস্পর কে বৃত্তের উপর কোন বিন্দুতে ছেদ করলে এদের মধ্যবর্তী কোণকে বৃত্তস্থ কোণ বা বৃত্তে অন্তর্লিখিত কোন বলে।

৬২। কেন্দ্রস্থ কোণ কাকে বলে?

উত্তরঃ একটি কোণের শীর্ষবিন্দু কোন বৃত্তের কেন্দ্রে অবস্থিত হলে কোণটিকে ঐ বৃত্তের একটি কেন্দ্রস্থ কোণ বলা হয়।

৬৩। বৃত্তস্থ চতুর্ভুজ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে চতুর্ভুজের চারটি শীর্ষবিন্দু বৃত্তের উপর অবস্থিত হয় সেই চতুর্ভুজকে বৃত্তস্থ চতুর্ভুজ বলে।

৬৪। স্পর্শক কাকে বলে?

উত্তরঃ একটি বৃত্ত ও একটি সরলরেখার যদি একটি ও কেবল ছেদবিন্দু থাকে তবে সরলরেখাটিকে বৃত্তের স্পর্শক বলা হয়।

৬৫। সাধারণ স্পর্শক কাকে বলে? 

উত্তরঃ একটি সরলরেখা যদি দুইটি বৃত্তের স্পর্শক হয় তবে উক্ত রেখাটিকে সাধারণ স্পর্শক বলা হয়।

৬৬। পরিবৃত্ত কাকে বলে?

উত্তরঃ তিনটি শীর্ষবিন্দু যোগ করে যেমন একটিমাত্র ত্রিভুজ হয় তেমনি তিনটি বিন্দু (শীর্ষ)গামী বৃত্তও একটিই, এর নাম পরিবৃত্ত।

৬৭। পরিকেন্দ্র কাকে বলে?

উত্তরঃ পরিবৃত্তের কেন্দ্র কে পরিকেন্দ্র বলে। 


কনিক

৬৮। কনিক কাকে বলে?

উত্তরঃ কার্তেসীয় সমতলে একটি নির্দিষ্ট বিন্দু ও একটি নির্দিষ্ট সরলরেখা থেকে যে সব বিন্দুর দূরত্বের অনুপাত একটি ধ্রুবক, তাদের সেই একটি সঞ্চারপথ এবং তাকে কনিক বলা হয় ।

৬৯। উপবৃত্ত কাকে বলে?

উত্তরঃ উপবৃত্ত হলো কতকগুলো বিন্দুর সমন্বয়ে গঠিত এমন একটি সমতলীয় বদ্ধ বক্ররেখা যেন ঐ বক্ররেখার উপর অবস্থিত যে কোন বিন্দু হতে দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দুর দুরত্বের সমষ্টি সব সময়ই একটি নির্দিষ্ট ধ্রূবক। প্রতিটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে উপবৃত্তের ফোকাস বা উপকেন্দ্র বলে। যেহেতু এমন দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দু রয়েছে, তাই উপবৃত্তের ফোকাস বা উপকেন্দ্র দুইটি। ফোকাস বিন্দু দুইটির মধ্যবর্তী দুরত্বকে ফোকাস দুরত্ব বলে। উপকেন্দ্র বিন্দু দুইটির সংযোজক রেখাংশের মধ্যবিন্দুই হলো উপবৃত্তের কেন্দ্র।

৭০। অধিবৃত্ত কাকে বলে? 

অধিবৃত্ত হলো কতকগুলো বিন্দুর সমন্বয়ে গঠিত এমন একটি সমতলীয় খোলা বক্ররেখা যেন ঐ বক্ররেখার উপর যেকোন বিন্দু হতে একটি নির্দিষ্ট বিন্দু এবং একটি নির্দিষ্ট রেখা উভয়েরই দুরত্ব সমান। নির্দিষ্ট বিন্দুটিকে বলা হয় অধিবৃত্তের উপকেন্দ্র বা ফোকাস এবং নির্দিষ্ট রেখাটিকে বলা হয় অধিবৃত্তের দ্বিকাক্ষ।


পরাবৃত্ত 

৭১। পরাবৃত্ত কাকে বলে?

উত্তরঃ পরাবৃত্ত হলো কতকগুলো বিন্দুর সমন্বয়ে গঠিত এমন দুইটি সমতলীয় খোলা বক্ররেখা যেন ঐ বক্ররেখা দুইটির অভ্যন্তরস্থ দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দু হতে প্রতিটি বক্ররেখার উপর অবস্থিত যেকোন একটি বিন্দুর দুরত্বের পার্থক্যের পরম মান সবসময়ই একটি নির্দিষ্ট ধ্রূবকের সমান। প্রতিটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে ফোকাস বা উপকেন্দ্র বলে। যেহেতু এমন দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দু রয়েছে, তাই পরাবৃত্তের উপকেন্দ্র দুইটি। উপকেন্দ্রদ্বয়ের সংযোজক রেখাংশের মধ্যবিন্দুকে পরাবৃত্তের কেন্দ্র বলে। দ্বিমাত্রিক জগতে পরাবৃত্ত হলো একই সমতলে অবস্থিত দুইটি প্রতিসাম্য বক্ররেখা বা একটি বক্ররেখা আরেকটির আয়না প্রতিচ্ছবি।

৭২। পরাবৃত্তের ফোকাস বা উপকেন্দ্র কাকে বলে? 

উত্তরঃ ফোকাস বা উপকেন্দ্র হলো পরাবৃত্ত বক্ররেখার অভ্যন্তরস্থ এমন দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দু যাদের থেকে পরাবৃত্ত বক্ররেখা দুইটির যেকোন একটির উপর যেকোন বিন্দুর দুরত্বের পার্থক্যের পরম মান একটি নির্দিষ্ট ধ্রূবক।

৭৩। পরাবৃত্তের কেন্দ্র কাকে বলে?

পরাবৃত্তের উপকেন্দ্র দুইটির সংযোজক রেখাংশের মধ্যবিন্দুকে পরাবৃত্তের কেন্দ্র বলে। অন্যভাবে বললে, পরাবৃত্তের বৃহৎ অক্ষ ও ক্ষুদ্র অক্ষের ছেদ বিন্দুকে কেন্দ্র বলে। তাছাড়া এই কেন্দ্র বিন্দুতে অক্ষদ্বয় পরস্পর সমকোণে মিলিত হয়।

৭৪। পরাবৃত্তের বৃহৎ অক্ষ কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃহৎ অক্ষ হলো উপকেন্দ্রদ্বয় দিয়ে অতিক্রমকারী সরলরেখা। পরাবৃত্তের বৃহৎ অক্ষ আবার প্রতিসাম্য রেখা বলে পরিচিত। বৃহৎ অক্ষের দৈর্ঘ্য হলো 2a. সুতরাং, অর্ধ বৃহৎ অক্ষের দৈর্ঘ্য হলো a.

৭৫। পরাবৃত্তের শীর্ষ কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃহৎ অক্ষ পরাবৃত্তকে যে বিন্দুতে ছেদ করে তাকে শীর্ষ বিন্দু বলে। অন্যভাবে বললে, উপকেন্দ্রদ্বয়ের সংযোজক রেখাংশ পরাবৃত্ত বক্ররেখা দুইটিকে যে দুইটি বিন্দুতে ছেদ করে তাদেরকে শীর্ষ বিন্দু বলে। কেন্দ্র থেকে যেকোন শীর্ষ বিন্দুর দুরত্ব $a$ যা অর্ধ বৃহৎ অক্ষের দুরত্বের সমান।

৭৬। পরাবৃত্তের অসীম তট কাকে বলে?

উত্তরঃ অসীম তট হলো কেন্দ্রগামী এমন একটি সরলরেখা যা পরাবৃত্তের বক্ররেখাকে কখনও ছেদ করবে না।

৭৭। পরাবৃত্তের ফোকাস দুরত্ব বা উপকেন্দ্রিক দুরত্ব কাকে বলে? 

উত্তরঃ কেন্দ্র থেকে যেকোন ফোকাস বা উপকেন্দ্রের দুরত্বকে ফোকাস দুরত্ব বা উপকেন্দ্রিক দুরত্ব বলে।

৭৮। পরাবৃত্তের উপকেন্দ্রিকতা কাকে বলে? 

উত্তরঃ ফোকাস দুরত্ব ও অর্ধ বৃহৎ অক্ষের দৈর্ঘ্যের অনুপাতকে উপকেন্দ্রিকতা বলে। এটিকে e দ্বারা সূচিত করা হয়। যদি পরাবৃত্তের ফোকাস দুরত্ব c এবং অর্ধ বৃহৎ অক্ষের দৈর্ঘ্য a হয়, তাহলে উপকেন্দ্রিকতা e = ca পরাবৃত্তের উপকেন্দ্রিকতা সবসময় এক অপেক্ষা বড় অর্থাৎ e > 1.

৭৯। পরাবৃত্তের দ্বিকাক্ষ বা নিয়ামক কাকে বলে?

উত্তরঃ দ্বিকাক্ষ বা নিয়ামক হলো কেন্দ্র হতে a2c একক দুরত্বে অবস্থিত বৃহৎ অক্ষের উপর লম্ব একটি সরলরেখা যেখানে a ও c হলো যথাক্রমে অর্ধ বৃহৎ অক্ষের দৈর্ঘ্য ও ফোকাস দুরত্ব। একটি পরাবৃত্তের এরূপ দুইটি দ্বিকাক্ষ থাকে।

৮০। পরাবৃত্তের উপকেন্দ্রিক লম্ব কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃহৎ অক্ষের উপর লম্ব এবং যেকোন উপকেন্দ্রগামী জ্যাকে উপকেন্দ্রিক লম্ব বলে। অন্যভাবে বলা যায়, উপকেন্দ্রিক লম্ব হলো বৃহৎ অক্ষের উপর লম্ব এবং উপকেন্দ্রগামী এমন একটি রেখাংশ যার প্রান্তবিন্দুদ্বয় পরাবৃত্তের বক্ররেখার উপর অবস্থিত। এটি উপকেন্দ্রগামী একটি বিশেষ জ্যা। আবার এটি উপকেন্দ্রগামী একটি অনন্য জ্যা যা বৃহৎ অক্ষ বা প্রতিসাম্য অক্ষ দ্বারা সমদ্বিখণ্ডিত হয়।


অন্যান্য

৮১। গোলক কাকে বলে?

উত্তরঃ দুইটি পরস্পর বিপরীত রশ্মি তাদের সাধারণ প্রান্ত বিন্দুতে যে কোণ উৎপন্ন করে, তাকে সরল কোণ বলে ।

৮২। ঘনবস্তু কাকে বলে?

উত্তরঃ তিন জোড়া সমান্তরাল আয়তাকার সমতল বা পৃষ্ট দ্বারা আবদ্ধ ঘনবস্তুকে  ঘনবস্তু বলে।

৮৩। ঘনক কাকে বলে?

উত্তরঃ আয়তাকার ঘনবস্তুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা সমান হলে, তাকে ঘনক বলে ।

৮৪। কোণক কাকে বলে?

উত্তরঃ কোন সমকোণী ত্রিভুজে সমকোণ সংলগ্ন যে কোন একটি বাহুকে স্থির রেখে ঐ বাহুর চতুর্দিকে ত্রিভুজটিকে ঘুরালে যে ঘনবস্তু উৎপন্ন হয় তাকে সমবৃত্তভুমিক কোণক বলে 

৮৫। সিলিন্ডার বা বেলন কাকে বলে?

একটি আয়তক্ষেত্রের যে কোন একটি বাহুকে স্থির রেখে ঐ বাহুর চতুর্দিকে আয়তক্ষেত্রটিকে ঘুরালে যে ঘনবস্তু উৎপন্ন হয় তাকে সমবৃত্তভুমিক বেলন বলে ।


কেমন লাগল লেখাটি? কমেন্ট করে আপনার মতামত জানান।
শেয়ার করে রেখে দিন আপনার টাইমলাইনে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

12 মন্তব্যসমূহ

  1. অধিকতর ভালো

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য। আমাদের সাথেই থাকুন।

      মুছুন
  2. জ্যামিতিক সংজ্ঞা সমূহের এই পোষ্ট খুবই উপকারী। কারন বইতে সবসময় সংজ্ঞাগুলো পাওয়া যায় না।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. অসংখ্য ধন্যবাদ। শেয়ার করে আমাদের সাথেই থাকুন।

      মুছুন
  3. সুন্দর লিখেছেন সব একজায়গায়

    উত্তরমুছুন
  4. অনেক অনেক ভালো হয়েছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ❤️❤️❤️

    উত্তরমুছুন

If it seems any informative mistake in the post, you are cordially welcome to suggest fixing it.